নিদ্রাহীনতা হলে কিভাবে চিকিৎসা করবেন?
প্রিয় পাঠক নিদ্রাহীনতা হলে কিভাবে চিকিৎসা করবে নিজে নিজে এ বিষয়ে আপনারা অনেক ওয়েবসাইট খোঁজাখুঁজি করেছেন এবং আরো খোঁজ করেছেন সাধারন তো মানুষের কতটুকু ঘুম দরকার। কিন্তু সঠিক তথ্য কোথাও পাননি। আমাদের আর্টিকেলটি পুরোপুরি মনোযোগ সহকারে পড়ুন আশা করি আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন ।
নিদ্রাহীনতা একটি বড় সমস্যা। ঘুম মানুষের শরীর সুস্থ রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষের প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন।
ভূমিকা
রাতে সময়মতো ঘুমানোর সমস্যা কম বেশি সবারই হয়। যত বয়স বেশি হয় তত সমস্যা বেশি হয়। কারণ মানুষের ঘুমের চাহিদা বয়সের ওপর ভিত্তি করে চলে। এক বা দুই মাসের মধ্যে ঘুমের সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। ঘুমের সমস্যা যদি অনেক বেশি দিন ধরে জ্বলে তাহলে আমাদের জীবনে অনেক রকম প্রভাব ফেলতে পারে। রাতে ঘুম না আসলে অনেক সময় অনেক ক্লান্তি বোধ হয়, যার কারনে আমাদের অনেক কাজ সহজ মনে হয় না। ইনসমনিয়ার কারণ এ মূলত প্রতিদিন ঘুমের সমস্যা হয়ে থাকে। কয়েক মাস থেকে শুরু হয়ে কয়েক বছরের এই ইনসমনিয়া স্থায়ী হতে পারে। ঘুমানোর অভ্যাস পরিবর্তন করলে সমস্যা সমাধান হয়।
ইনসমনিয়া আছে কিনা কিভাবে বুঝবেন?
- আপনার যদি প্রতিদিন ঘুমাতে সমস্যা হয়।
- রাতে বারবার ঘুম থেকে জেগে উঠেন।
- শুয়ে থাকলেও ঘুম আসে না।
- সকালে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙ্গে যায়
- ভোরের ঘুম ভাঙলে আর ঘুম আসে না।
- ঘুম থেকে উঠলে মনে হয় অনেক ক্লান্তি বোধ।
- দিন অনেক ক্লান্তি বোধ হয় এবং নিজেকে অস্বাভাবিক মনে হয়।
- ক্লান্তির জন্য কোন কাজে মন বসানো যায় না।
- ক্লান্তি বোধ হলেও দিনের বেলা ঘুম আসে না।
কি সব সমস্যা থাকলে মনে করবে না আপনার ইনসমনিয়া আছে। মাঝে এই বৈশিষ্ট্য গুলো সব কয়টা থাকতে পারে আবার অনেকের মাঝে দু-একটাও থাকতে পারে। যদি তিন মাস বা এর কম সময় এসব সমস্যায় ভোগেন তাহলে একে বলে স্বল্প স্থায়ী ইনসমনিয়া। আর দীর্ঘ স্থায়ী ইনসমনিয়া সাধারণত তিন মাসের বেশি হয়ে থাকে।
সাধারণত মানুষের কতটুকু ঘুম দরকার ?
বয়স বেটে মানুষের ঘুমের চাইতে ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দৈনিক ৭-৯ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। শিশু-কিশোরদের জন্য ৯-১৩ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। নবজাতকদের ১২-১৭ ঘন্টা ঘুম প্রয়োজন হয়ে থাকে। সারাদিন যদি নিজেকে ক্লান্ত মনে হয় তাহলে মনে করতে হবে আপনি হয়তো ঠিকমতো ঘুমাচ্ছেন না। অনেক সময় আমাদের মনে চিন্তা আসে যে আমরা কি পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাচ্ছি? কারো কারো কম ঘুম কারো স্বাভাবিক ঘুম হতে পারে। ঘুম নিয়ে চিন্তিত থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ইনসমনিয়া কেন হয়?
- ইনসমনিয়ার খুব সাধারণ সমস্যা হচ্ছে,
- মানসিক চাপ, উদ্বেগ কিংবা বিষন্নতা।
- অতিরিক্ত শব্দ।
- অতিরিক্ত ঠান্ডা কিংবা অতিরিক্ত গরম ঘর।
- আরামদায়ক নয় এমন বিছানা।
- অ্যালকোহল, ক্যাফেইন এবং নিকোটিন।
- কোকেন কিংবা অন্য ধরনের মাদকদ্রব্য।
- জেড ল্যাগ বা ভ্রমজনিত ক্লান্তি।
- এগুলা ছাড়াও অনেক ধরনের কারণ রয়েছে যার কারণে ইনসমনিয়া হতে পারে।
নিদ্রাহীনতা হলে কিভাবে চিকিৎসা করবেন নিজে নিজে ?
ইনসমনিয়া দূর করার প্রধান কারণ হলো ঘুমের অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। কিভাবে ঘুমের অভ্যাস পরিবর্তন করবেন তা হলো:
- প্রতিনিয়ত একই সময়ে ঘুমোতে হবে।
- প্রতিনিয়ত একই সময়ে জেগে উঠতে হবে।
- ঘুমাতে যাওয়ার সর্বনিম্ন ১ ঘন্টা আগে থেকে বিশ্রাম নিতে হবে।
- ঘুমানোর আগে ঘর টি যেন অন্ধকার হয় এবং নিরিবিলি হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
- দিনের বেলা পর্যাপ্ত পরিশ্রম করতে হবে। চাইলে ব্যায়ামও করতে পারেন।
- ঘুমের আগে হালকা নাস্তা করতে হবে যেমন গরম দুধ বা গরম কোনো পানীয়।
এমন কোন খাবার খাওয়া যাবেনা আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। যেমন চা,কফি, চকলেট , ড্রিংস, অতিরিক্ত পানি সংঘটিত খাবার।
ইনসমনিয়া দূর করতে যা করা যাবেনা
ঘুমানোর কমপক্ষে ছয় ঘন্টা আগে থেকে চা কফি আল কল এবং ধূমপান করবেন না।
- মধ্যরাতে কোন ভারী খাবার খাওয়া যাবে না।
- ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত ৪ ঘন্টা আগে ব্যায়াম বন্ধ করতে হবে।
- প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ঘুমাতে যেতে হবে।
- দিনের বেলা ঘুম থেকে এড়িয়ে চলতে হবে।
- ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা আগে মোবাইল ফোন বা টেলিভিশন দেখা বন্ধ করে দিতে হবে।
লেখকের মন্তব্য
ঘুম মানুষের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। যা মানুষের মস্তিষ্কে কন্ট্রোল করতে সাহায্য করে। আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন তাদেরকেও ভালো থাকার সুযোগ করে দিন।
পার্মানেন্ট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url