সরিষার তেল মালিশের, চুলের ও ত্বকের বিশেষ উপকারিতা জানুন
সরিষার তেল মালিশের, চুলের ও ত্বকের বিশেষ উপকারিতা জানুন। সরিষা তেল খাওয়ার মাধ্যমে আমরা অনেক উপকারিতা পেতে পারি। বিশেষজ্ঞরা সরিষার তেল খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এছাড়াও ত্বকের চুল সহ নানা প্রকারের উপকারিতা পাওয়া যায়।
পোস্ট সূচিপত্র: সরিষার তেল মালিশের, চুলের ও ত্বকের বিশেষ উপকারিতা
সরিষার তেল খেলে কি হয়
সরিষার তেল খেলে কি হয় জেনে নিন। আপনার শীতল খাওয়ার মত আমরা অনেক প্রকারের উপকারিতা পেয়ে থাকি। কারণ সরিষার তেলের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ ভিটামিন বিটামিন সি ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ভিটামিন ছাড়া আরো অনেক উপাদানের উপস্থিতি পাওয়া যায়। যেগুলা ত্বক ও চুলে আরো নানা প্রকারের উপকারিতা লুকিয়ে থাকে।
বিশেষজ্ঞরা সরিষার তেল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাহলে সরিষার তেলের মালিশের উপকারিতা পাশাপাশি চুল ও ত্বকের উপকারিতা জেনে নিন।একটা সময় গ্রাম বাংলার মানুষেরা শরীরের সাথে তেল ছাড়া অন্য কোন তেল ব্যবহার করত না। তখন রান্না করে খাওয়া থেকে শুরু করে রূপচর্চা ও চুলের ব্যবহারের জন্য সরিষার তেল ব্যবহার করতো।
আমাদের দেশে সরিষার তেলের ইতিহাস প্রায় শত বছরের। তখন বাচ্চা থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক সকলের সরিষার তেল ব্যবহার করতো। কারণ সরিষার তেলের গন্ধ তাদেরকে মুক্ত করতে পাশাপাশি তারা সরিষার তেল ব্যবহারের মাধ্যমে অনেক উপকার পেতো। কিন্তু বর্তমানে অনেকেই বলে সরিষার তেলের মধ্যে কোন উপকারিতা নাই যেটি একদম ভুল কথা।
সরিষার তেল ত্বক বা মুখে ব্যবহার করলে মুখ কালো হয়ে যায় এটিও ধারণা করে। কিন্তু সরিষার তেল রান্না করে খাওয়া মালিশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের মাধ্যমে উপকারিতা পাবেন। তাই সরিষার তেল ব্যবহারে যে উপকারিতা গুলো পাবেন তা জেনে নিতে হবে। সরিষার তেল মালিশের, চুলের ও ত্বকের বিশেষ উপকারিতা।
সরিষার তেল মালিশের উপকারিতা
সরিষার তেল মালিশের, চুলের ও ত্বকের বিশেষ উপকারিতা জেনে নিন। আমরা যারা সরিষার তেল নিয়মিত ব্যবহার করি। বিশেষভাবে যার সরিষার তেল শরীরে বিভিন্ন অংশে মালিশের ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকেন। তাদের জন্য শরীরে যত স্থান গুলোর উপকারিতা রয়েছে। কারো সরিষার তেল মালিশের আরাম পাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রোগের সমাধান পাওয়া যায়।
- হাটু ও মাজা শরীরের বিভিন্ন যন্ত্রের ব্যথায় আমরা কাতর হয়ে যায়। এ ব্যথা থেকে আরাম পেতে সরিষার তেল মালিশ করতে পারেন এতে ব্যথা কমে যাবে। এতে আপনাকে তৎক্ষণাৎ আরম দিতে পারে।
- সরিষার তেল গরম করে শরীর মালিশ করার মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে পারেন। এর জন্য সরিষার তেলটি গরম করুন তারপরে যে স্থানগুলোতে ব্যথা রয়েছে সেসব স্থানগুলোতে গরম কৃত তেল দিয়ে মালিশ করতে থাকুন। এর ফলে ব্যাথা আপনার কাছ থেকে দূরে পালিয়ে যাবে এবং আরাম দেবে। এরপর আপনার আগে তুলনায় রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে।
- সর্দি-কাশি জ্বরের ক্ষেত্রে সরিষার তেলের মালিশের মধ্যে উপকারিতা লুকিয়ে রয়েছে অনেক। আপনি জেনে খুশি হবেন যে সরিষার তেল গরম করার পর তার মধ্যে আধা চামচ কালোজিরা দিয়ে শরীরের এপাশ ওপাশে মালিশ করার মাধ্যমে আরোগ্য গুলো থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- শীতের সময় সরিষার তেলে কার্যকারিতার কোন বিকল্প নেই। কেননা শীতে সরষে তেল দিয়ে মালিশ করলে শরীরকে গরম রক্ত সহায়তা করে এরপরে ঠান্ডা কম লাগা সম্ভবনা রয়েছে। শুধু তাই না নিয়মিত সরিষার তেলের মালিশ নিলে শীতের সময় হওয়া অনেক রোগের থেকে দূরে থাকা যায়।
ত্বকে সরিষার তেলের উপকারিতা
- ত্বকে দাগ সার্কেল থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারেন। তাইতো সরিষার তেলের সাথে লেবুর রস বেসন ও দই মিশিয়ে তারপরে আপনার পুরো ত্বকে মালিশ করুন। অতঃপর ৮ থেকে ১২ মিনিট রেখে দিন। তারপরে পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এভাবে একদিন পর পর ব্যবহার করুন।
- রোদের মধ্যে থাকা ক্ষতিকারক রশিগুলো থেকে বেঁচে থাকার জন্য সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারেন। শুধু তাই নয় সূর্যের আলো তো তার থেকে রক্ষা পাবেন।
- আপনি কি জানেন ত্বকের শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষার জন্য যুগ যুগ ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে সরিষার। আধা চামচ সরিষার তেল হাতে নিয়ে মুখে মালিশ করুন আর কিছুক্ষণ পর পরিস্কার পানি দ্বারা মুখ ধুয়ে ফেলুন।
- যাদের শীতের সময় ঠোট ফাটা সমস্যা রয়েছে তারা ঠোঁট ফাটার হাতে রক্ষা পাওয়ার জন্য দুই এক ফোঁটা সরিষার তেল ঠোঁটের ব্যবহার করতে পারেন এতে করে ঠোঁট ফাটার সম্ভাবনা নেই।
- আপনি যদি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে চান। তাহলে নারকেলের সরিষার তেলে একসাথে ব্যবহার করতে পারেন। এ দুটো তেল একসাথে মিশে তোকে মালিশ করতে পারেন সাত থেকে আট মিনিট মালিশ করার পর ত্বক পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- আপনার মত অনেক আছেন যাদের ত্বকে এলার্জি চুলকানোর জন্য তো সমস্যা রয়েছে। তারা সরিষার তেল ব্যবহার করে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেন।
- ত্বকের বয়সের ছাপ ফুসকুড়ি করে ব্রণের দাগ ও ব্রণ দূর করার ক্ষেত্রে সরিষার তেল সহায়তা করে। হাতে আধা চামচ সরিষার তেল মাখিয়ে নিন তারপর ওই হাত ত্বকের মালিশ করুন। দেখুন কিছুক্ষণ পরে ফলাফল কতটা উপকারী হয়।
বাচ্চাকে সরিষার তেল দিলে কি হয়
চুলে সরিষার তেলের উপকারিতা
- চুল দ্রুত বৃদ্ধি করার জন্য সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারেন। কারো সাথে তোমাদের রয়েছে আলফা ফ্যাটি এসিড যা চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে। যদি চুল পড়া সমস্যা রয়েছে তারা সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারেন।
- মেয়েদের চুল পড়া সমস্যা আছে তাই সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারেন।
- যাদের চুল পড়া সমস্যা রয়েছে তার সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারেন। কারণ শরীরের চুল পড়া বন্ধ করে চুলের গোড়াকে শক্তিশালী করে তুলতে পারে। সাধারণত চুল পড়ার কারণ হচ্ছে ফলি কল দুর্বল হয়ে যাওয়া রোধ করতে সরিষার তেল সহায়তা করে।
- আমরা সকলেই চাই চুলকে আগের তুলনায় একটু বেশি বড় করতে। সত্যি যদি চুলকে আগে তোল না বেশি বড় করতে চান তাহলে সরিষার তেলের সমাধান খুঁজে পাবেন। কারণ সরিষার তেলে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড জিংক ও সিলেনিয়াম যা চুলের উজ্জ্বলতা ও গ্রোথ ধরে রাখতে পারে এবং চুল বাড়তে সাহায্য করে।
- চুলের তালুতে সঠিকভাবে রক্ত সঞ্চালন না হওয়ার কারণে চুলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। কারণ এ সমস্যাটি শুধু আপনার এক আর নয় অনেকেরই রয়েছে। তাইতো রক্ত সঞ্চালের স্বাভাবিক রাতে সরিষার তেল ব্যবহার করুন।
- অনেকের চুল পেকে যাওয়া রোধ করার জন্য সরিষার তেলের মধ্যে উপকার পাবেন।
- চুলের গোড়া পাতলা চুলকানি খুশকি রোধ করতে সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারেন। কারো সরিষার তেলের মধ্যে এন্ট্রি ফাংগাল নামে উপাদান থাকে যা এর সমাধানে ভূমিকা পালন করে।
- চুলে উকুনের হাতে বাঁচানোর জন্য সরিষার তেল ব্যবহার করুন এবং নিয়মিত চিরুনি দিয়ে মাথার চুল হাছড়াবেন। তাহলে উপন্য নামক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন।
- সরিষার তেলে অ্যালোভেরা ভালো করে মিশিয়ে প্রায় ৪০ মিনিট রেখে দেন তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এরপরে সরিষার তেলের সাথে ধনে গুঁড়া মিশে মাথায় ব্যবহার করুন। এ সময়ের পর শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন তারপর সরিষার তেলের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। মাথায় দেওয়ার প্রায় ৪০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
চুলে সরিষার তেলের অপকারিতা
রান্নায় সরিষার তেলের উপকারিতা
- হার্ট ভালো রাখে: হার্ট ভালো রাখার জন্য সরষে তেলের মধ্যে উপকারিতা রয়েছে অনেক। কারণ সরিষার তেলের মধ্যে মনোসেচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড ও পোলিওনসেচুরেটেড হার্টকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি রক্তে কোলারেস্টোরলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়: ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতে সরিষার তেল রান্না করে খেতে পারেন। যা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে থাকে। তাইতো সরিষার তেল নিয়মিত খাওয়ায় রয়েছে অনেক উপকারিতা।
- মাথার জন্য কার্যকরী ভূমিকা: আমরা অনেকে কখনো না কখনো মাথা ব্যথার মতো সমস্যা প্রায় সকলের রয়েছে। যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা হওয়ার কারণে মাথাব্যথা হয়ে থাকে তারা সরিষার তেল খাওয়ার মত মাথাব্যথা কমানো সহজ স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধিতে দারুন ভূমিকা পালন করে।
- হজম শক্তি বৃদ্ধি: বর্তমান সময়ে হজম শক্তি সমস্যা অনেকেরই রয়েছে। যদি এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে ঘরোয়া হিসেবে সরিষার তেল খেতে পারেন। কেননা সরিষার তেল হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে দারুন কাজ করে থাকে। পাশাপাশি আপনি আর একটি উপকার পাবেন সেটা হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে মুক্তি। কারণ কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যার কারণে হজমে গোলমাল পেট ব্যথার মত সমস্যা হয়ে থাকে।
- ব্যথার উপশম: নিয়মিত সরিষার তেল রান্না করে খাওয়ার মাধ্যমে শারীরিক দিয়ে সকল ব্যথা রয়েছে তা থেকে উপশম পাবেন। তাই নিয়মিত রান্না করে শেষে তেল খাও না তুমি শরীরের ব্যথাগুলো থেকে উপশম পাবেন। শুধু কি তাই দাঁতের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া থেকে মুক্তি দিতে পারে সরিষার তেল।
- কোলেস্টেরল বৃদ্ধি: শরীর খারাপ কোলেস্টোরল এ মাত্রা কমিয়ে ভালো করে কোলেস্টেরল মাত্রা বৃদ্ধিতে সরিষার তেল দারুন কাজ করে থাকে। তাইতো ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করার জন্য নিয়মিত সরিষার তেল খেতে থাকুন। সরিষার তেল কোলেস্টেরল দারুন এক উৎস।
পার্মানেন্ট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url