মাইলেসীয় দর্শনের একটি রূপরেখা আলোচনা কর
প্রাচীন সভ্যতা লীলাভূমিকে বিশ্ব নন্দিত করেছেন কর্তৃপয় দার্শনিক ও
চিন্তাবিদরা। দার্শনিক চিন্তার মূল উপজীব্য ছিল বিশ্ব সৃষ্টির উৎস কোথায় তা বের
করা। দার্শনিক ব্যবহার বা বৈজ্ঞানিক প্রয়োগের দ্বারা নিজেদের জীবন বিমুখ করেননি
তারা জীবন ঘনিষ্ঠ চিন্তা ভাবনাকে বিশ্লেষণ করে দেখতে চেয়েছেন।
এর ফলে আইয়নীয় দার্শনিক সম্প্রদায়ের দার্শনিক তিনজন থিয়েটার শুনে কি মিলে টাস
নগরের বাসিন্দা ছিলেন বলে তাদের মাইলেসীয় দার্শনিক সম্প্রদায় বলা হয়। তাই
মাইলেসীয় দর্শনের একটি রূপরেখা সম্পর্কে আপনারা জানতে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ
সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র: মাইলেসীয় দর্শনের একটি রূপরেখা
- মাইলেসীয় দর্শনের একটি রূপরেখা
- থেলিসের জীবন বিজ্ঞান ও জ্যামিতিতে তার কৃতিত্ব
- থেলিসের দর্শনের গুরুত্ব জেনে নিন
- থেলিসের দ্বারা দর্শনের সূচনা হবার সামাজিক কারণ
- এনাক্সিমেন্ডার পরিচয় ও কৃতিত্ব
- এনাক্সিমেন্ডারের দর্শনের গুরুত্ব
- এনাক্সিমেন্ডারের দর্শনের গুরুত্ব ও থেলিসের দর্শনের থেকে অগ্রগতি
- এনাক্সিমিনিস জীবন দর্শন সম্পর্কে জানুন
- এনাক্সিমিনিসের দর্শনের গুরুত্ব
- মাইলেসীয় বা আইয়নীয় দার্শনিক সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য গুরুত্ব
- আইয়নীয় দার্শনিকদের মধ্যে তৎকালীন ধর্মের প্রভাব
- লেখকের মন্তব্য
মাইলেসীয় দর্শনের একটি রূপরেখা
মাইলেসীয় দর্শনের একটি রূপরেখা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। প্রাচীনকালে গৃহীত
দের প্রধান চার জাতের মধ্যে (আখিয়ান, ইটালিয়ান, ডোরিয়ান , আয়োনিয়ান)
আয়োনিয়ান বা আয়োনিয়রা এশিয়া মাইনরের উপনিবেশ স্থাপন করেছিল। সে উপনিবেশে মোট
12 টি শহরের ইতিহাসের কথা রয়েছে যাদের একটি নাম মিলেটাস। যে অঞ্চলে এই মিলেটাস
তার নাম আইয়নীয়।
আয়োনীয়রা অধিবাসীদের প্রায় সবাই নাবিকের জীবন যাপন করত তাদের জীবিকা ছিল
ব্যবসা-বাণিজ্য। এজন্য তারা দূর দূরান্তে যাত্রা করতো এভাবে খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ
থেকে সপ্তম শতকে তারা বহু দেশকে অনেকটা জানতে পারি জানা জানির ভেতর দিয়ে সমগ্র
অঞ্চলের নাম গ্রীস হয়। ব্যবসা বাণিজ্য ছাড়াও আইয়নীয়রা শিল্পকলা তো অত্যন্ত
পারদর্শী ও দক্ষ ছিল।
বহির্জগতে গ্রীক কারিগড়তে চাহিদা ছিল এরা ব্যবসার সাথে ভাব বিনিময় করেন। কালা
গুহায় অঙ্কিত শিল্প নিদর্শন ও বিভিন্ন বৌদ্ধ মদের গায়ে ঘটিত ভাস্কর্য শিল্পের
উপর গ্রিক ভাস্কর্য রীতি সার্থক প্রভাব দেখা যায় গান্ধার শিল্প। এই গ্রীকের কেউ
কেউ সৃষ্টির মূল তথ্যকে জানার জন্য চিন্তা ভাবনা করেন। এই চিন্তা ভাবনা থেকে
গ্রেট দর্শন সবচেয়ে পুরনো শাখা আইয়নীয় সম্প্রদায়ের মুখ্য দার্শনিকদের
আবির্ভাব ঘটে।
এদের কেউ অগ্মূনিকে পানিকে মূল তত্ত্ব কেউ বায়ুকে কেউ আকাশকে। এ দার্শনিক
সম্প্রদায়ের সময়কাল খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ থেকে ৪০০ অব্দ পর্যন্ত। আইয়নীয় দার্শনিক
থেলিস ৬২৪ থেকে ৫৪৭ খ্রিস্টপূর্ব বললেন জল আদি উপাদান। ৫৪৭ খ্রিস্টপূর্ব বললেন
বস্তুত মূল উপাদান নির্দিষ্ট কিছু না এর আকার-নীতি নেই তার নাম দিলেন সীমাহীন বা
বাউন্ডলেস।
এনাগুলি মিনিট ৫৮৮ থেকে ৫২৪ খ্রিস্টপূর্বায়কের মূল তত্ত্ব বললেন। এই
সম্প্রদায়ের আবির্ভাবের এক শতক আগে উপনিষদের দার্শনিকদের প্রশ্ন করে দেখা যায়
বিশ্বের মূল উপাদান কি তারা বলে নির্মূল উপাদান হলো পরম বৃক্ষ। তাদের দার্শনিক
চিন্তার মূল উপযোগ্য ছিল বিশ্ব সৃষ্টির উৎস কোথায় তা বের করা। আকাশ চেরি
কল্পনায় বিশ্বাসী ছিলেন না সে সময়ে জ্ঞান জগতের একতা নকশা তৈরি করেন যা বহুদিন
ধরে বণিকদের পথ প্রদর্শন করে।
অর্থাৎ তার দার্শনিক ব্যবহার বা বৈজ্ঞানিক প্রয়োগের দ্বারা নিজেদের জীবন বিমুখ
করেননি তারা জীবন ঘনিষ্ঠ চিন্তা ভাবনাকে বিশ্লেষণ করে দেখতে চেয়েছেন। এ
দার্শনিকদের প্রশ্ন ছিল কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে রাহুল সংস্কৃতায় ও তার দর্শন
গ্রন্থে বলেছেন "আইয়নীয়রা দার্শনিকগণ জীবনকে এত তুচ্ছ মনে করতেন না যে তার জন্য
পৃথক একটা চেতনচালক শক্তির প্রয়োজন হবে।
মেঘ গর্জন বহমান নদী সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস দোলায়িত বৃক্ষ স্পন্দিত পৃথিবী
প্রাণের বিস্ফোরণ কে প্রমাণ করে এর জন্য কোন স্রষ্টা বা অন্তযামি কে জানার
প্রয়োজন তারা বোধ করেননি। বস্তু জ্ঞানী তাদের কাছে যথেষ্ট বলে মনে হয়েছিল।"
তৎকালীন সময় ভারতের উপমহাদেশের চার ভাগ্যবদ্ধ দার্শনিকরা সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে
জিজ্ঞাসু ছিলেন না। আয়নীয় দার্শনিক সম্প্রদায়ের তিনজন দার্শনিক ছিলেন। যেমন:
থেলিস, এনাক্সিমেন্ডার, এনাক্সিমিনিস।
থেলিসের জীবন বিজ্ঞান ও জ্যামিতিতে তার কৃতিত্ব
থেলিস (খ্রিস্টপূর্ব ৬২৪-৫৪৬ অব্দ)। ছেলের সব দর্শনের প্রবর্তক বা জনক বলা হয় এ
ম্যান অফ সাইন্স বলা হয়। তার বহুমুখী কর্মশক্তি ও অসাধারণ উদ্ভাবন ক্ষমতা ছিল।
তিনি সমুদ্র তীর্থের সমুদ্র অবস্থিত জাহাজের দূরত্ব আবিষ্কার পদ্ধতি আবিষ্কার
করেন। শীতকাল আসার পূর্বে আকাশের নক্ষত্র পর্যবেক্ষণ করে বের করেন যে আগামী
মৌসুমের জলপাইয়ের ফলন ভালো হবে।
এই জ্ঞান থেকে তিনি ধনী হন। এখান থেকে তিনি প্রমাণ করেন যে দার্শনিকরা ইচ্ছা করে
ধনী হতে পারেন কিন্তু সেটা তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা নয় তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ভিন্ন
ধরনের। গণিত যদি বিদ্যা সংক্রান্ত জ্ঞান বাস্তব বুদ্ধি তীক্ষ্ণ বোধশক্তি ও
বিচিত্র কর্মদক্ষতার জন্য প্রাচীন গ্রিসে খেত ও সম্মানের পাত্র হন। সে সময়
বিজ্ঞানে যতটুকু উন্নতি হয় তার সাথে ঘনিষ্ঠতা ছিল অবশ্যই থেলিসদের আগে বিজ্ঞানের
জন্ম হয়েছিল কিনা তা বিতর্কের বিষয়।
কারণ খেলিসের আগ পর্যন্ত জ্যোতি বিদ্যা সব বিভিন্ন বিষয়ে ধর্ম পৌরাণিক বিশ্বাসের
দখল থেকে মুক্তি পায়নি। তবুও এখন জ্যামিতিতে মিশর যুক্তি বিদ্যায় ব্যাভিলন ও
নৌবিদ্যায় মিশরীয় বণিকরা বিখ্যাত ছিল। ব্যবসার জন্য সম্ভবত থেলিস মিশরে যান ও
সেখানকার জ্যামিতি শিখেন। কিন্তু মিশরী আজা মিথ্যার প্রয়োগ কেবল জমি জমা মাপার
ক্ষেত্রে ব্যবহার করত। খেলিস প্রথমবার তা থেকে সমুদ্রের জাহাজের দূরত্ব মাপতে
সক্ষম হন।
জ্যামিতিতে একটি কথা জানা এক জিনিস আর তা প্রমাণ করতে পারা আরেক জিনিস। প্রমাণ
করা সত্যগুলো মিশরিয়া স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি থেলিস সেটা পেরেছিল। যেমন
মিশরীয়রা জানতো বৃত্তের ব্যাস বৃত্তকে দুই ভাগে ভাগ করে। কিন্তু তারা তা প্রমাণ
করতে পারত না। থেলিস এটি প্রমাণ করার পথ দেখান তাই ইমুনায়েল কান্ট থেলিস কে
প্রথম প্রকৃতি গণিতের সম্মান দিতে চেয়েছেন। থেলিস মিশরীয় জ্যামিতির উন্নয়নে
অনেক অবদান রাখেন।
একইভাবে বেবিলনীয় জ্যোতি বিজ্ঞানী কেউ তিনি উন্নয়নের ঘটান। বেবিলনয়রা
কেবলমাত্র গ্রহণক্ষত্র ছবি এঁকেছিল। ৫৮৫ সালে তিনি ছকের ওপর নির্ভর করে হিসাব করে
দেখান কবে গ্রহণ হবে। আকাশে তারার উপর নির্ভর করে দিক নির্ণয়ের যে কৌশল ব্যবহার
তো করেছিলেন থেলিস গ্রিক জ্যোতিবিদ্যার ক্ষেত্রে সে কৌশল আমদানি করেন।
থেলিসের দর্শনের গুরুত্ব জেনে নিন
থেলিস তার দর্শন চিন্তার জন্য সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত ছিলেন। কিন্তু এ পর্যন্ত
পাওয়া থেলিসে দার্শনিক মত মাত্র দুইটি। যেমন:
- থেলিসের মধ্যে পরম সত্তা হলো জল বা পানি জল থেকে সবকিছুর উৎপত্তি জলের মধ্যে সবকিছু বিলীন হয়ে যায়।
- পৃথিবীর জলের উপর ভাসমান একটি সমতল চাকতি।
প্রথমটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ এর ফলে দুটো প্রশ্ন ওঠে –
- থেলিস জলকে সব বস্তুর রাধে কারণ কেন মনে করলেন?
- কোন পদ্ধতি বা প্রক্রিয়া অনুসারে জল বিভিন্ন বস্তুতে পরিণত হয়েছে বা জল থেকে এ বিশ্বজগতের উদ্ভব হয়েছে?
থেলিস সে এই প্রশ্নের কি উত্তর দিয়েছিলেন তা জানা যায়নি। প্রথম প্রশ্নের
ক্ষেত্রে অ্যারিস্টটল মনে করেন যে সব পুষ্টিকর পদার্থের মধ্যে আদ্রতা আছে আর
যা কিছু আদ্রতা থেকে উত্তাপ এর উৎপত্তি। জলের সাহায্যে যে প্রাণ ধারণ করে
এছাড়া সব বীজের মধ্যে একটা সেত সেতে বা ভেজা ভাব রয়েছে। এসব দেখেই থেলিস এই
সিদ্ধান্ত এসেও থাকতে পারেন।
তৃতীয় প্রশ্নের ক্ষেত্রে তিনি বলেন, ফিলিস উৎপাদনের সাথে গতিশক্তিকে
প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত মনে করতেন। বার্নেট বলেন অ্যারিস্টটলের এই অনুমান
পরবর্তী এক দার্শনিক দ্বারা প্রভাবিত যিনি বলেছিলেন বায়ু হচ্ছে সবকিছুর মূল
এবং বায়ু ও জলের বাষ্পীভূত অবস্থা আসলেই একই জিনিস। সে দার্শনিক এটাও
বলেছিলেন যে বায়ুতে বিশুদ্ধ ও অধিকতর স্বচ্ছ আর্দ্রতার অবস্থা রূপে ধরা যায়
মাইলেসীয় দর্শনের একটি রূপরেখা।
থেলিসের দর্শনের গুরুত্ব
থেলিসের বক্তব্যে নতুন কিছু নেই। তার আগে কবি হোম আরোহীর কল্পনা করেছিলেন
যে জল থেকে পৃথিবীর সৃষ্টি হয়। মিশরে ব্যাবিলনের প্রাচীন পুরানেও এরকম কথাই
লেখা আছে। ব্যাবিলনের পুরানো আছে একক কালে সবকিছু জল ছিল সৃষ্টিকর্তা, মারদুক
আদি প্লাবন থেকে পৃথিবী সৃষ্টি করেছে। জল থেকে সবকিছুর উৎপত্তির জলে সবকিছুর
পৌরনীতি এ কথাটা থেলিসের দর্শনের মূল কথা হলো এটা দার্শনিক ক্ষেত্রে
গুরুত্বপূর্ণ নয়।
কারণ জল থেকে পৃথিবীর সৃষ্টি হবার ব্যাপারটা বিভিন্ন পৌরনিক কল্পনায় উঠে
এসেছিল। তাহলে প্রশ্ন আসে চিন্তায় যদি নতুন কিছু নাই থাকে তবে তিনি কেন
দর্শনের জনক? সৃষ্টিকর্তাকে বাদ দেওয়া তাকে দর্শনের জনক বলার কারণ হচ্ছে তিনি
প্রথম পৌর নিচ্ছেন তার কাঠামোটাকে বাদ দিয়ে প্রকৃতি বৈজ্ঞানিকের মেজাজ নিয়ে
বিশ্বের রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করেন।
থেলিসের আসল বউ রোগ হচ্ছে তিনি প্রথম জগতের উৎপত্তির ব্যাখ্যা থেকে
মার্দুক মতো সৃষ্টিকর্তাকে বাদ দিয়ে দেন। তিনি বিধাতা পুরুষকে বাদ দিয়ে কেবল
প্রার্থীব জিনিসের সাহায্যে পরম সত্তাকে চেনার চেষ্টা করেছিলেন পৌনে কল্পনাকে
পেছনে ফেলে তিনি বিজ্ঞানের আলোয় বিশ্ব রহস্যের সমাধান করতে চেয়েছিলেন।
তার বক্তব্য আর যাই হোক তা ধর্ম বিশ্বাসের অঙ্গ নয় বা পৌরনিক কল্পনার কৃতদাস।
বিশ্বজগতের ঐক্য ও বিবিদের মধ্যে ঐক্যের ধারণা। আরেকটু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার
হলো বিশ্ব জগতের ঐক্য সম্পর্কে ধারণা করেন। দর্শনের একটি লক্ষ্য হচ্ছে
একটিমাত্র মূলনীতি বা তত্ত্বের অনুসন্ধান। থিওরি অফ এভরিথিং। যা দিয়ে সব
কিছুকে ব্যাখ্যা করা যাবে।
অন্যভাবে বললে দর্শন সত্যের একটিমাত্র সঙ্গতি বা এই সিঙ্গেল সিস্টেম অফ
রিয়েলিটি এর অনুসন্ধান করে। থেলিসের আগে এটা নিয়ে কেউ ভাবেনি। কপোলস্টোন বলেন
তিনি বস্তু সমূহ কে একটি প্রাথমিক বা মৌল উপাদানের ভিন্ন ভিন্ন রূপ হিসেবে
ধারণা করেছেন। এভাবে খেলে সর্বপ্রথম বিবিদের মধ্যে ঐক্য বা ইউনিটি ইন
ডিফারেন্সের ধারণা দেন।
এই উইকেট ধারণা অটল থেকে তিনি বহুত্বের বৈচিত্র্যের ব্যাখ্যা দেবার চেষ্টা
করেন। থেলিস ভেবেছিলেন এই জগতের অসীম বৈচিত্রের মধ্যেও যথেষ্ট সঙ্গতি আছে। আর
এই জন্যই জগতের একটিমাত্র তত্ত্বের কথা ভাবা যেতে পারে এই রকম ভাবনায় দর্শনের
সূত্রপাত ঘটায়। প্রশ্ন উত্থাপন। একজন দার্শনিকের কৃতিত্ব কেবল প্রশ্নের উত্তর
দেওয়ায় নয়, একই সাথে প্রশ্ন করাতেও।
থেলিস ও একত্রিতে কৃতিত্বের কৃতী। তিনি যে প্রশ্ন স্থাপন করেন তার সঠিক জবাব
হয়তো তিনি দিতে পারেননি কিন্তু সেই প্রশ্নটি তিনি উত্থাপন করে গিয়েছিলেন তা
জবাব পরবর্তী সমস্ত কালে দার্শনিকরা খুঁজে গেছেন, আজকের যুগের পদার্থবিজ্ঞানীরা
ও এ থিওরি অফ এভরিথিং খুঁজতে ব্যস্ত রয়েছে। এছাড়া থেলিসের পরবর্তী সময়ে
অন্য আরেকটি প্রশ্ন গোটা দর্শন রাজ্য জুড়ে বিস্তারিত ছিল।
তাহলে সবকিছু কি একটি মাত্র সত্তা থেকে নিঃসৃত? মনের ধারণার বদলে বস্তু জগতের
কার্যকারণ নিয়মে ব্যাখ্যা ধানের চেষ্টা করেন। থেলিসের আগে বস্তুর বা ঘটনার
কার্যকারণের ব্যাখ্যায় আনা হতো কারণ মন ইচ্ছা এসবকে।থেলিস কোন ধারণা কোন
অনুষঙ্গের সাহায্যে বিষয়ের ব্যাখ্যা করেননি, তিনি ব্যাখ্যা করলেন স্থান কালে
অবস্থিত বস্তুর সঙ্গে বস্তুর যে কার্যকারণ সম্পর্ক তার সাহায্যে।
থেলিসের সর্ব-প্রানবাদ বা সর্বাত্মকবাদ
উপরের বিষয়টি ছাড়াও অ্যারিস্টটলের একটি সংক্ষিপ্ত উক্তি থেকে জানা যায় যে
জগতে যা কিছু দেখা যায় সবই ঈশ্বরের দ্বারা পূর্ণ। শেষ বলেন যেহেতু চুম্বক
গ্রহকে আকর্ষণ করে তাই তার আত্মা বা প্রাণ আছে দ্রব্যের মধ্যে আত্মা প্রাণ আছে।
থেলিসের এই মতে পরবর্তীকালে সজীব বস্তুবাদ বা সর্বাত্মকবাদ নামে পরিচিত
লাভ করে।
থেলিসের দ্বারা দর্শনের সূচনা হবার সামাজিক কারণ
গ্রিক সভ্যতার চেয়ে ব্যাবিলিয়ন ও মিশরীয় সভ্যতা পুরনো কিন্তু তাও সেসব
সভ্যতার প্রাচীন উন্মেষ না ঘটে গ্রীষ্মে কেন ঘটল? এটা থেলিসের একক প্রতিভার ফল
নাকি জাতি হিসেবে গ্রীকদের প্রতিভার ফল? নাকি দুটোই? বৃদ্ধের প্রতিভার ভিত্তি
ছিল তাদের সমাজের কাঠামো। গ্রীক দর্শনের ইতিহাস আলোচনা করলে দেখা যায় তার
সমাজের প্রথম স্তরটা ছেড়ে যতই তারা দ্বিতীয় স্তরের দিকে এগিয়েছে ততই তাদের
মধ্যে শোকেন চিন্তা বিভক্তের লক্ষণ দেখা গেছে।
কিন্তু থেলিস যে সময়টা দার্শনিক যে সামাজিক পরিস্থিতির সঙ্গে ও যে সামাজিক
শ্রেণীর সঙ্গে তা যোগাযোগ ছিল তা ছিল দাস সমাজের প্রথম দিক। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ
শতকের আয়নীয়রা রাজনৈতিক শক্তি অনেকটাই ছিল সওদাগত শ্রেণীর হাতে। এর
শ্রেণীবিজ্ঞানের উন্নতির মাধ্যমে পৃথিবীতে আরো ভালো করে জয় করতে চাই তো। তারা
সামাজিক মেহনত অংশগ্রহণ করে।
দাস প্রথা তখনো মেহনতির জীবনকে ঘৃন্যা চোখে দেখার স্তরে পৌঁছায়নি। এ
আইয়নীয়রা সবচেয়ে কর্মমুখর সহ ছিল মিলেটাস। সে মিলেটার শহরের সওদাগর সেমিরা
একজন ছিলেন থেলিস। আর তাই তার কাছে ধর্মমুহূর্তে প্রয়োজনীয় নয় প্রয়োজনীয়
ছিল বিজ্ঞান। আর তাই বিশ্ব রহস্য ভেদ করার জন্য তিনি ধর্ম মোহরের দ্বারস্থ না
হয়ে দারস্ত হতে চাইলেন বিজ্ঞানের।
আর তাই বিশ্ব রহস্যভেদ করে বিশ্বের মার্দূকের মতো সৃষ্টিকর্তার স্থান রইল
না।থেলিস বললেন এই বাস্তব জগতের একটি পদার্থ আত্মা কোন আধ্যাত্মিক কিছু নয়
সেটি হলো পানি বা জল। থেলিসকে বস্তুবাদী করে তুলেছিল তার কর্মজীবনের সাথে
বিজ্ঞানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। এটাই তার চিন্তা কে আধ্যাত্মিক বাদ বা ভাব তাদের মন
থেকে সরিয়ে নেয়।
এজন্য তিনি লাভ করেন প্রথম দার্শনিকের গৌরব। জগতের অসীম ও অনন্ত বৈচিত্রের মূলে
মাত্র একটি শর্ত রয়েছে এই চিন্তাটাই থেলিসকে কেবল গ্রিক দর্শন নয় এমনকি
ইউরোপীয় দর্শন বা পাশ্চাত্য দর্শনেরও নয় তাকে সর্বকালের দর্শনের জনক হবার
কৃতিত্ব দান করেন।
এনাক্সিমেন্ডার পরিচয় ও কৃতিত্ব
এনাক্সিমেন্ডার পরিচয় ও কৃতিত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। থেলিসের
সমসাময়িক বা শীর্ষ ছিলেন। মাইলেসিয়রা অধিবাসীরা তাকে এপলিনিয়ার একটি কলোনির
নেতা নির্বাচন করে তাতে তার রাজনৈতিক গুরুত্ব ও অভিজাত পরিবারের জন্মের
ব্যাপারে অনুমান করা যায়। অন্যান্য গ্রিক দার্শনিকদের মত তিনি ও রাজনীতিতে
জড়ান।
জ্যোতিবিদ্যা ও ভৌগল বিজ্ঞানের জন্য তার খ্যাতি ছিল তিনি থেলিস এর সৃষ্টিতত্ত্ব
নিয়ে গবেষণা করেন ও তার গবেষণার ফল গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেন তবে সে গ্রন্থের
সন্ধান পাওয়া যায়নি। টেনে প্রথম গ্রিক দার্শনিক যিনি গ্রন্থ লিখেছিলেন।
এছাড়া তিনি সর্বপ্রথম প্রাচীন গদ্য লেখক। টেনে সর্বপ্রথম একটি মানচিত্র
অংকন করেন সম্ভবত কৃষ্ণ সাগরের নাবিকদের জন্য।
জ্যোতি বিদ্যা ও ভূগোল চর্চার জন্য তিনি মডেলের প্রবর্তন করেন। বিজ্ঞানের
অগ্রগতির ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। থেলিস এর মত দিনেও ব্যবহারিক বিজ্ঞান
চর্চায় আত্মনিয়োগ করেন। টেনে থেলিসের মতো একজন যন্ত্র শিল্পী ছিলেন থেলিসের
মতো বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী।
এনাক্সিমেন্ডার দর্শন
সীমাহীন বা বাউন্ডলেসের ধারণা। তিনি বস্তু জগতের পরম শ্রদ্ধার প্রকৃত রূপ
সনাক্ত করতে চান। থেলিসের নিয়ে জলের মতো কোনো বস্তুকে পরম বস্তু মানতে তিনি
রাজি হননি তিনি বস্তু জগতের এমন একটি সূক্ষ্মবস্তুকে পরম সত্য মনে করতে চান যা
থেকে অগ্নি বায়ু জল মাটির সব স্থল বস্তুর উৎপত্তি রয়েছে।
তার কাছে এই আদি সপ্তা হচ্ছে সীমাহীন বা বাউনটলেস এটা হলো সীমাহীন অবনীয় বস্তু
যাতে সবকিছু জন্ম হয় ওসব কিছু বিলীন হয়ে যায়। এটা কোন নির্দিষ্ট জ্বর নয়,
এটা হল আকারহীন অনির্দিষ্ট সকল প্রকার বৈশিষ্ট্য বর্জিত মানে এতে কোনরকম
বৈশিষ্ট্য নেই। কোন কিছু থেকে এই সীমাহীন উৎপত্তি হয়নি।
এটি প্রথম থেকেই আছে কোন কিছু থেকে একটি গতিপ্রাপ্ত হয়নি গতি অর্থ হলো যার ফলে
এটি বিবর্তিত হয়ে বিভিন্ন বস্তু সৃষ্টি হয়েছে। তবে মনে রাখতে হবে এই সীমাহীন
আধ্যাত্মিক কিছু নয় এনাক্সিমেন্ডার দর্শনে এই সীমাহীন ও একটি বাস্তব জিনিস বড়
জগতের পদার্থ। কেন তার কাছে মূল উপাদান সীমাহীন? কেউ মনে করেন, তিনি ভেবেছিলেন
জল যেহেতু বিশ্বের একটি নির্দিষ্ট অংশ মাত্র তা এর পক্ষে বিশ্বের মূল উপাদান
হওয়া সম্ভব নয়।
অংশের সাহায্যে সমগ্র ব্যাখ্যা দেওয়া যায় না। তা বিশ্বের মূল উপাদান কে হতে
হবে অসীম ও সর্বব্যাপক। বার্নেট বলেন এন এক্স সিলিন্ডারে চিন্তা জগতে একাধিক
বিরুদ্ধে দ্বন্দ্ব দেখা যায়। যেমন উষ্ণ ও শীতল আর্দ বা শুষ্ক। এনাক্সিমেন্ডার
চিন্তা জগতে একাধিক বিরুদ্ধে বিষয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা যায়।
এনাক্সিমেন্ডার মনে হয়েছিল থেলিস শুষ্ক তার চেয়ে আদ্রতার উপর বেশি গুরুত্ব
দিয়েছেন তিনি মনে করছেন এরকম যত প্রকারের বিপরীতবিরুদ্ধ রূপ আছে সবই কোন
অবিশেষ অনির্দিষ্ট জোত থেকে বিছিন্ন বা পৃথক হয়ে এই বিশেষ বিশেষ বিপরীত
বিরুদ্ধে লাভ করেছেন। এনাক্সিমেন্ডার অনির্দিষ্ট জ্বর কে প্রাথমিক উপাদান
হিসেবে গণ্য করলেন।
তাই এনাক্সিমেন্ডার থেলিসের মত বিপরীত কোনগুলোর বিষয়টি বিবেচনা না করে একটি
বিশেষ গুণের সাথে মূল উপাদানকে অভিন্ন ভাবা তাকে সমর্থন করতে পারেননি। তার কাছে
তাই সীমাহীন নিরপেক্ষ হবে শেষ কিছুই হলো মৌলিক জোয়ার যেখান থেকে বিপরীত বা
বিরুদ্ধ গুণগুলো পৃথক হয়ে বিভিন্ন সত্তা লাভ করেছে।
অ্যারিস্টটল বলেন এনাক্সিমেন্ডার ভেবেছিলে সীমাহীন বিপরীত কোনগুলো যেমন পৃথক
সত্তা লাভ করে তেমনি সেসব কিছু উপাদান গুলো আবার সীমাহীন এ মিলিয়ে যায়। যে
উৎস থেকে বস্তু সময়ের উৎপত্তি সেখানে আবার তাদেরকে ফিরে যেতে হয় এরা সময়ের
ক্রমানুসারে একে অন্যের সন্তোষ বিধান বা ক্ষতিপূরণ করে থাকে।
যদি এই মূল জল উপাদান অসীম না হয়ে সসীম হত তাহলে অসংখ্য জগতে সৃষ্টি ধ্বংসের
জন্য ব্যবহৃত হতে গিয়ে জল উপাদান অনেক আগে শেষ হয়ে যেত। কারো কারো মতে
এনাক্সিমেন্ডার ভাবতো জগত হল ধারাবাহিক একটি জগতে সৃষ্টি ও ধ্বংসের পর আরেকটি
জগতে সৃষ্টি হতো। আবার কারো মতে এনাক্সিমেন্ডার মতে জগতের ধারাবাহিক নয় বরং
সমকালীন তবে এই জগতের কোন কিছু চিরস্থায়ী নয়।
এনাক্সিমেন্ডারের দর্শনের জ্বর ও জীবজগতের বিবর্তন কিভাবে এই আকারবিহীন
অনির্দিষ্ট অফিসের জল উপাদান থেকে অসংখ্য জগতের সৃষ্টি হল? এখানে স্পষ্ট উত্তর
পাওয়া যায় না। এনাক্সিমেন্ডার এর এ প্রথম উপাদান সীমাহীন। স্বয়ম্ভু (নিজে
নিজে সৃষ্টি করেছে বা আপনা আপনি সৃষ্টি হয়েছেন কোন কিছু থেকে আসেনি), ঈদের দিন
আসলে এর গতি ও অন্তত।
গতি বলতে এর পরিবর্তনের ব্যাপারটাকে বলা হচ্ছে। এই অনন্ত গতির একটি বিশেষ
পর্যায়ে বিশ্বব্রক্ষান্ডের সৃষ্টি হয়। আব্রাহামিক ও পৌরনিক সৃষ্টিতত্ত্বের
মতো এটি সৃষ্টি হয়নি। এ সৃষ্টি হয়েছে বিবর্তনের মাধ্যমে। কেবল তাই নয়
এনাক্সিমেন্ডার মতে প্রাণিজগতের বিবর্তন ঘটেছে তার মতে সমুদ্র থেকে সব জীবের
উৎপত্তি।
বর্তমান পৃথিবীতে যেসব প্রাণী দেখা যায় নতুন পরিবেশের সাথে তাদের অভিযোজন বা
সামাজ্য বিধানের ফলে তার বর্তমান রূপ লাভ করেছে। মানুষের উৎপত্তি ও এভাবে তার
মধ্যে শুরুতে মানুষ অন্য প্রজাতিভুক্ত ছিল। এভাবে আধুনিক বিবর্তনবাদের সাথে
এনাক্সিমেন্ডার এর বিবর্তনের মাধ্যমে এরকম সামঞ্জস্য পাওয়া যায়।
এনাক্সিমেন্ডার বলেন গতির কারণে সীমাহীন থেকে বিশেষ বিশেষ বস্তুর পৃথকীকরণ
সম্ভব হয় তার মতো জগৎ গঠিত হবার মূলে রয়েছে বিপরীত বা বিরুদ্ধে বিভক্ত বা
বিচ্ছিন্ন হবার প্রক্রিয়ায় অবিশেষ অনির্দিষ্ট আকারহীন প্রাথমিক উপাদান গতির
কারণ কোন অনিশ্চিত প্রক্রিয়ায় নিজেকে উষ্ণ ও শীত তুলে দিয়ে বিভক্ত করে এরপর
শীতল পরিণত হয় আদ্র ও সেত সেতে।
এই আর্দ্র জোর উপাদান বিশ্বজগতের কেন্দ্র পৃথিবীর রূপ গ্রহণ করল। উষ্ণ ঝড়
উপাদান পৃথিবীর বেষ্টনকারী অগ্নি মন্ডলে পরিণত হলো। পৃথিবী ছিল মূলত তরল। তার
পাশের উত্তর পেয়ে পৃথিবীর জল ধীরে ধীরে বাষ্পীভূত হয়ে বাতাসের আবরণ সৃষ্টি
করে পৃথিবীকে বেষ্টন করলো। উত্তাপের প্রভাবে বাষ্প বিস্তৃত লাভ করে
অগ্নিমন্ত্রে রাখতে বাইরে গিয়ে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যায় অসংখ্য চাকরীতে
খোসারক গ্রহণ করে পৃথিবীর চারপাশে আবর্তিত হতে থাকে এরা সূর্য চন্দ্র তারকা
ইত্যাদি গ্রহণক্ষত্র।
তার মতে বিশ্ব জগতের কেন্দ্রে অবস্থিত এ পৃথিবী মালাকার যার উপরে ভাগে মানুষ
বাস করে এর ব্যাস উচ্চতা তুলনায় তিনগুণ। কারো মতে তিনি মনে করতেন সূর্য পৃথিবী
থেকে ২৭ বা ২৮ গুন বড়। ভারসাম্য বজায় রাখার প্রাকৃতিক নিয়ম। এনাক্সিমেন্ডার
মতে পৃথিবীতে সুনির্দিষ্ট পরিমাণে আগুন জল ও মাটি ছিল। এগুলো সব পৃথিবীতে
ছড়িয়ে পড়ার অবিরাম প্রচেষ্টা চালায়।
কিন্তু একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় বজায় রাখার জন্য এক ধরনের অনিবার্য
প্রাকৃতিক নিয়ম রয়েছে। এর ফলে যেখানে আগুন থাকবে সেখানে ভষ্ম থাকবে ভস্ময়
হলো পৃথিবী। এখান থেকে এনাক্সিমেন্ডার ন্যায় পরায়ণতা ও জাস্টিসের একটি ধারণা
পাওয়া যায় যা ভারসাম্যরকের একটি অনিবার্য প্রাকৃতিক নিয়মের দ্বারা
নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু এনাক্সিমেন্ডার দর্শন নিয়ে অনিবার্য প্রাকৃতিক নিয়ম
কোন ঈশ্বর নয়।
(গ্রিকদের বিশ্বাসে ন্যায় পড়ানো তো ব্যাপারটা ছিল যা নিশ্চিত ভাবেই
এনাক্সিমেন্ডারকে প্রভাবিত করে। তাদের কাছে নেই তাই যা শ্বাশত ভাবে সুনির্দিষ্ট
সীমাকে অতিক্রম করেনি তাদের কাছে মানুষও দেবতা সবই এই ন্যায়পড়ায়নাতার তার
অধীনে ছিল। এনাক্সিমেন্ডার যে প্রাকৃতিক উপাদান গুলো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ার
উদ্দেশ্যে অবিরাম প্রচেষ্টার কথা বলেছিলেন সেসব প্রাকৃতিক উপাদানকে দেবতা
হিসেবে কল্পনা করতো।)
একটি উপাদান এর ওপর অন্য উপাদানের অবৈধভাবে পর্দাপণ ছিল এনাক্সিমেন্ডার ভাষায়
অনাখ্যাত বা অন্যায়। গ্রীষ্মকালে উষ্ণ উপাদানও শীতকালে শীতল উপাদানের
ইন্ডাস্ট্রিজ দেখা যায়। এ বিশেষ উপাদান গুলির এ ইনজাস্টিস এর ক্ষতিপূরণ হয়
সীমাহীন এর মধ্যে মিশে গিয়ে। এভাবে এনাক্সিমেন্ডার মানুষের জীবনের আইনের
ধারণাকে সমগ্র জগতের উপর প্রয়োগ করেন।
এনাক্সিমেন্ডারের দর্শনের গুরুত্ব ও থেলিসের দর্শনের থেকে অগ্রগতি
থেলিসের আদি উপাদান জলের থেকে এনাক্সিমেন্ডার আদি উপাদান সীমাহীন বা
বাউন্সলেসের অগ্রগতি ছিল। কারণ এখানে বিমূর্ত চিন্তা বা অ্যাবস্ট্রাক্ট থট এ এর
ব্যাপার দেখা যায়। এছাড়া এনাক্সিমেন্ডারের মূল উপাদানের তত্ত্ব থেকে
বিপরীত কোণের বস্তুগুলো সৃষ্টির ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে যাদের মধ্যে থেলিসের জল
ও একটি। একটি বিশেষ উপাদানের তুলনায় একটি নির্বিশেষ সীমাহীন থেকে সবকিছু
উদ্বুদ্ধ হয়েছে।
এ ধারণাটি চিন্তার অগ্রগতিকে নির্দেশ করেছে। থেলিস আদিমতত্ত্ব জল দিয়ে কিভাবে
বিশ্ব সৃষ্টি সেই ব্যাখ্যায় যাননি। কিন্তু এনাক্সিমেন্ডার তার তথ্যের ধারণা
থেকে কিভাবে অস্থির জগতের ব্যাখ্যা দিয়েছেন অর্থাৎ মাইলেসীয় দর্শনের একটি
রূপরেখা তার দর্শনে বিশ্বজগতের বিবর্তনে একটি ব্যাখ্যা পাওয়া যায় এটা ও একটি
অগ্রগতি।
এনাক্সিমিনিস জীবন দর্শন সম্পর্কে জানুন
তিনি মাইলেসিয়া দর্শন ঘোরানো তৃতীয় শেষ দার্শনিক। তিনি এনাক্সিমেন্ডার ছাত্র
হতে পারেন। তিন একটি গ্রন্থ রচনা করেন যারা একটি ক্ষুদ্র অংশ পাওয়া যায়। তিনি
থেলিস ও এনাক্সিমেন্ডার মত মৌলিক প্রতিভার অধিকারী ছিলেন না। বা নেটের মতে তার
দর্শন তার পূর্ববর্তী দর্শনে অগ্রগতি সূচনা না করে পশ্চাতে ইঙ্গিত করে। জগতের
আদমসত্তা হলো বায়ু।
এনাক্সিমিনিস এনাক্সিমেন্ডার সীমাহিনীর ব্যাপারটা ছিল ধোঁয়াটে আর থেলিস জল ছিল
স্থল। তিনি এই দুই এর মধ্যে মিল ঘটানোর জন্য আদিম তত্ত্ব বা পরম পদার্থ হিসেবে
আনলেন বায়ুকে তার মতে বায়ু বিমূর্ত নয় কিন্তু সূক্ষ্ম এছাড়া বায়ু যে
বস্তুজগতের জিনিস আধ্যাত্মিক কিছু নয় তা তো স্পষ্ট। এনাক্সিমেন্ডার সাথে তার
মতবাদের পার্থক্য হল তার আদিমতত্ত্ববিশেষ নয় এটি একটি নির্দিষ্ট গুণযুক্ত
দ্রব্য যেমনটা থেলিস ভেবেছিলেন।
তবে এনাক্সিমেন্ডার সীমাহিনীর দুটি বৈশিষ্ট্য আছে যা বায়ুর মধ্যেও আছে সেগুলো
হলো সীমাহীনতা নিরবিচ্ছিন্ন গতি। এবারও স্থান বাসে সীমাহীনভাবে বিস্তারিত
বিচ্ছিন্নভাবে গতিশীল পরিবর্তনশীল। গতিশীল ক্ষমতা বায়ুর অন্তর্নিহিত ক্ষমতা
ভর্তির দ্বারা তার মধ্যে বায়ু থেকে জগতের উৎপত্তি হয়েছে। কেন তিনি বায়ুকে
আদম তত্ত্ব বা পরমসত্তা হিসেবে গ্রহণ করলেন?
মানুষ আর পোশাক ছাড়া বাঁচেনা তাই বায়ুকে জীবনের মূল উপাদান বলে মনে হতে পারে।
প্রাচীনকালে বায়ুকে শ্বাস মনে করা হতো আর আত্মা বলতে বোঝার তো যা প্রাণীতে
চেতনা তৈরি করে। একটা ও বায়ুকে অভেদ কল্পনা করা হতো অনেক সময়। গ্রাম্য বলেন
এভাবে বায়ু আত্মার অনুরোধ করণ প্রাণ ও জড়ের মধ্যে সম্পর্ক নির্দেশ করে।
এনাক্সিমিনিস বললেন আমাদের আত্মা যে আসলে বায়ু যেমন আমাদেরকে ধরে রাখে তেমনি
শ্বাস প্রশ্বাসে বাতাস সমগ্র জগত কে পরিবেশ টন করে থাকে তাই বায়ু হলো জগতের
মূল উপাদান। এবার থেকে অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ সব বস্তুর উদ্ভব হয়েছে অন্যান্য
সবকিছু বায়ু থেকে তৈরি বস্তু থেকে উৎপন্ন। জগত আসলে জগতের বাইরে সীমাহীন পুঞ্জ
বা বাউন্ডলেস মাস থেকে শ্বাস বা বায়ু গ্রহণ করছে।
এ বায়ুকে তিনি দেবতা বলে আখ্যায়িত করেন। জগতে বিবর্তন ও বায়ু থেকে অন্যান্য
উপাদানের সৃষ্টি কিভাবে বায়ুর থেকে সবকিছু উৎপত্তি হলো সে ক্ষেত্রে তিনি
ঘণিভবন ও সংকোচনের দুটি প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ করেন। প্রথমটি উষ্ণ হওয়া
দ্বিতীয়টি শীতল হাওয়া নির্দেশ করে বায়ুকে দেখা যায় না কিন্তু এই দুই
প্রক্রিয়ার ফলে বায়ুকে দেখা যায়।
এনাক্সিমিনিস মনে করেন বায়ু সংকোচন হলে অগ্নির সৃষ্টি হয় আগুন হল হালকা
বায়ু। আবার বায়ু ঘনীভূত হলে প্রথমের জল পড়ে মাটি আরো ঘনীভূত হলে পাথরে পরিণত
হয়। এভাবে তার বিবর্তনের ধারণাটি নির্ভর করেছে ঘনীভবনের মাত্রার ওপরে আর এই
মাত্রার পার্থক্যের উপর নির্ভর করে কোন দ্রব্যের সৃষ্টি হবে সেটা।
আবার তার মত যথা সময় জগতার আদিম উপাদান বায়ুতে প্রত্যাবণ করবে। কপোল্ডস্টোন
বলেন তিনি মনে করেছেন বায়ু সংকুচিত হয়ে উত্তপ্ত হলে আগুন হয় আর ঘনীভূত হলে
শীতল ও কঠিন হয়। অর্থাৎ বায়ু হল মাঝামাঝি কিছু। জেলার বলেন আগুনে ঘনীভবন
ও সংকোচনের ব্যাপার গুলো বায়ুমণ্ডলের ঘটে। দ্বীনি বায়ুমণ্ডলের এ
প্রক্রিয়াগুলো প্রত্যক্ষনের মাধ্যমে বায়ুর আদিম উপাদানের সিদ্ধান্ত এসেছিলেন।
এনাক্সিমেন্ডার মতো অনন্ত সংখ্যক জগতের মতবাদ সম্বোধন করেন।
প্রচলিত মতবাদ অনুসারে জগতগুলো ছিল ধারাবাহিকতা ত্যাগ জগতের শেষের পর আরেক
জগতের উৎপত্তি হবে আর এভাবে জগতের সংখ্যা হবে অনন্ত অসীম। তিনি বার্নেট বলেন এই
দার্শনিকদের জগতের ধারাবাহিক না হয়ে সমকালীন হতে পারে। অর্থাৎ একই সাথে
অসীমযোগ সংখ্যক জগতের অস্তিত্ব থাকতে পারে। এরকমটাও তারা ভেবে থাকতে
পারেন।
এনাক্সিমিনিস মনে করতে সৃষ্টি প্রক্রিয়ার শুরুতে পৃথিবীর উৎপত্তি হয় আর এটি
একটি সমতল গোলাকার তালার মত যা বাতাসের উপর ভাসমান। গ্রহ নক্ষত্র বাতাসের উপরে
ভাজছে সমতল পৃথিবী কে বায়ুর উপরে ধরে রাখছে এর থেকে উচিত সংকুচিত হয়ে আগুনে
পরিণত হয় যার অংশবিশেষ বাতাসের চাপে তারায় পরিণত হয় ।
এগুলো আকার পৃথিবীর আকারের মতো আরও এরা পৃথিবীতে আবর্তিত হয়ে আছে বাতাসের উপর
ভেসে ভেসে। এনাক্সিমিনিস উপলব্ধি করেন যে চাঁদ সূর্য থেকে আলো পায় তিনি
সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের প্রাকৃতিক ব্যাখ্যা দিতে পেরেছিলেন। তিনি রংধনুর
একটা ব্যাখ্যা দেন ঘন মেঘের উপসূর্য রশির পরিণতি থেকে রংধনু সৃষ্টি বলে তিনি
ব্যাখ্যা করেন। সূর্যের যে রশ্মি ঘন মেঘ কে ভেদ করে যেতে পারে না তাই রংধনু
সৃষ্টি করে।
এনাক্সিমিনিসের দর্শনের গুরুত্ব
দর্শন চিন্তার জন্য এনাক্সিমিনিস প্রাচীনকালে এনাক্সিমেন্ডার চেয়ে বেশি
প্রশংসিত হন কিন্তু আধুনিককালে পন্ডিতরা বলেন তার দর্শন চিন্তা ছিল যে যেন
এনাক্সিমেন্ডার চিন্তা থেকে একধাপ পিছিয়ে আসা। এনাক্সিমেন্ডার থেলিসের মূত্র
আদিম উপাদান থেকে সরে এসেছে বিমুর্ত আদম সত্তা ধারণা দিয়ে চিন্তার অগ্রগতি
আনলেন এনাক্সিমিনিস যেন সেখান থেকে পিছিয়ে গিয়ে আবার থেলিসের কাছে ফিরে
এলেন।
এনাক্সিমেন্ডার চিন্তায় যেমন মূত্র বিষয়কে ছড়িয়ে বিমূর্তি চিন্তা রয়েছে তা
এনাক্সিমিনিস দর্শনা অনুপস্থিত রয়েছে। তবে একটি ক্ষেত্রে এনাক্সিমিনিস
এনাক্সিমেন্ডার ছাড়িয়ে গেছে নো চিন্তার অগ্রগতি সাধন করেছেন বলা যায়।
এনাক্সিমেন্ডার তা সীমাহীন থেকে জগতের উৎপত্তির ব্যাখ্যায় বলেন সীমাহীন থেকে
বিরুদ্ধে গুণের বস্তুগুলো পৃথককরনের মাধ্যমে বিভিন্ন বস্তু সৃষ্টি
হয়েছে।
কিন্তু কিভাবে সেটা হয়েছে বা কোন পদ্ধতিতে তা হয়েছে সেগুলো বলা হয়নি।
এনাক্সিমিনিস তার দর্শন ছিনতাই গ্রহণ ও সংকোচনের পদ্ধতির কথা আমি যার মাধ্যমে
আদি উপাদান বায়ু থেকে বিভিন্ন বস্তু সৃষ্টি হয়। এটাকে এনাক্সিমিনিস
এনাক্সিমেন্ডার ইন্টার থেকে অগ্রসরতা বলতেই হয়। তিন মাইলেসীয় বা আইয়নীয়
দার্শনিকদের মধ্যে এনাক্সিমিনিস সবথেকে উল্লেখযোগ্য ছিলেন।
আসলে মিলিটাসের দার্শনিক মতবাদ সামগ্রিকভাবে এনাক্সিমিনিস দর্শন নামে পরিচিত
ছিল। পিথাগোরাস ও পিথাগোরাসের পরবর্তী দার্শনিক চিন্তায় এনাক্সিমিনিস সাথে
একমত পোষণ করে বলেছিলেন পৃথিবীর আকার চারকি বা ডিস্কের মতো।
মাইলেসীয় বা আইয়নীয় দার্শনিক সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য গুরুত্ব
আইয়নীয় দর্শনের বৈশিষ্ট্য হলো এর বিশ্ব তান্ত্রিক ধ্যান ধারণা। এই দর্শনে
জগতের উৎপত্তির কারণ স্বরূপ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।এই দার্শনিকরা ছিলেন
মুক্তচিন্তক। অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার মুক্ত হয়ে তারা স্বাধীন ও যুক্তিভিত্তিক
চিন্তা ধারার দ্বারা তাদের মতবাদ তৈরি করেন। তাদের দর্শন পাওয়া যায় প্রকৃতির
সাথে বৈজ্ঞানিক চিন্তাহীন ও বায়ুর সাথে জগতের ব্যাখ্যা দিতে চেয়েছেন ।
কোন আধ্যাত্মিক সত্তা থেকে না আবার কেউ কেউ কিভাবে সে সত্তা থেকে জগতে উৎপত্তি
হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে চাইলেন। তারা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহার না করলে
পরবর্তীতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির উদ্ভবের তাদের দর্শনের প্রভাব রয়েছে তারা ছিলেন
জড়বাদী বা বস্তুবাদী কারো না জগতের আদি কারণ তাদের মধ্যে জড় বা বস্তু কোন
চেতন বিশিষ্ট সত্য নয়।
তাদের দর্শন ছিল অ্যান্টলজিক্যাল বা সত্তা তাত্ত্বিক কারণ তারা জগতের আদি বা
মূল সত্তা সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক ছিলেন। তাদের দর্শন জড়বাদী হলেও ছিল সজীব
জড়বাদী কারণ তারা মনে করতেন সব পদার্থের প্রাণের অস্তিত্ব আছে। তার জ্ঞান তোকে
দেখতে তারা নির্বিচার বাদে বা ডাকনীতিক কেননা তাদের দর্শনে গেলে সীমাবদ্ধতা
নিয়ে কোন কথা নেই।
মানুষের জ্ঞানের সীমা কতখানি মানুষ যা পড় তখন করে তাই বাস্তব কিনা মানুষের
সবকিছু জানার ক্ষমতা আছে কিনা এসব নিয়ে কিছু বলেননি তারা। তারা ধরে নিয়েছেন
যে মানুষের মনের জগত বিষয়ক সব সমস্যার সমাধানের ক্ষমতা রয়েছে। তবে ইন্দ্রিয়
জগতের মূল্যায়ন এদের জ্ঞানতত্ত্বের দিক দিয়ে মূল্যবান।
তারা সত্ত্বেও রিয়ালিটি বা অভ্যাস বা ইপিয়ারেন্সের মধ্যে কোন পার্থক্য
নির্দেশ করেননি তাদের কাছে যা প্রত্যক্ষনের বিষয়ে তাই সত্তার বিষয় হয়ে গেছে।
সত্তা ও অভ্যাস এর মধ্যে পার্থক্য না তারা বলেননি যে ইন্দ্রিয় যত উল্লেখ বা
মিথ্যা পরবর্তী অনেক দার্শনিক বলে গেছেন। তাদের কাছে ইন্দ্রিয় জগত যে প্রকৃতি
জগতের মত সময় ও বাস্তব ছিল তা পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাসের ঐতিহ্য একটি
গুরুত্বপূর্ণ দিক।
তাদের দার্শনিক চিন্তার মূল উপজীব্য ছিল বিশ্ব সৃষ্টির উৎস কোথায় তা বের করা।
আকাশ চেরি কল্পনা বিশ্বাসী ছিলেন না তারা দার্শনিক ব্যবহার বা বৈজ্ঞানিক
প্রয়োগের দ্বারা নিজেদের জীবন বিমুখ করেননি তারা জীবন ঘনিষ্ঠ চিন্তা ভাবনাকে
বিশ্লেষণ করে দেখতে চেয়েছেন। তারা তাদের দর্শনে কোন জিনিসটিকে জগতে পরম সত্তা
বলে বিবেচনা করেছিলেন তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তাদের বস্তুবাদ।
বিজ্ঞানের আলো বিশ্বের অংশভেদের চেষ্টা পৌরনীক চিন্তাধারাও ধর্মকে পেছনে ফেলে
এগিয়ে আসাটা। তারা কেউ প্রশ্ন করেন কে এই বিশ্ব সৃষ্টি করেছে প্রশ্ন করেছেন কি
থেকে বিশেষ সৃষ্টি হল ভারতবর্ষের চার ভাগ্য বৌদ্ধ দর্শনের সাথে তুলনা। তাদের
দর্শন আধ্যাত্মিকতার কোন স্থান ছিল না। বস্তু জ্ঞানী তাদের কাছে যথেষ্ট
ছিল।
আর তাদের গুরুত্ব এখানে যে তারা পাশ্চাত্য দর্শনের বিকাশ ঘটানোর প্রথম প্রয়াস
আগে গিয়েছে দর্শন সেটা বলতে কিছুই ছিল না। এমনকি গ্রিক সভ্যতা ও মিশরীয়
সভ্যতার দ্বারা প্রভাবিত সেখানে দর্শনসিদ্ধার কোন অস্তিত্ব ছিল না। এ সমস্ত
সভ্যতার প্রথম দর্শন নিয়ে আসেন এই মাইলোসীয় দার্শনিকরা।
আর সে দর্শন আছে তাদের জগত সম্পর্কে জানার প্রচেষ্টা থেকে তাদের দর্শনে ঈশ্বরের
উপর মানুষের ব্যক্তিত্বের আরও পর যৌগিক মানবিক আশা আকাঙ্ক্ষা নৈতিক ধারণা
অনধিকার চিত্র দেখা যায়। তারা যে প্রশ্ন উত্থাপন করেন সেগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ
ছিল আর তাদের চিন্তার মৌলিক ও বলিষ্ঠতা পরবর্তীকালে দার্শনিকদের অনুপ্রাণিত
প্রভাবিত করে থাকে।
মাইলেসীয় দর্শনে অগ্রগতির মূলে ছিল ব্যাবিলিন ও মিশরের সাথে গ্রেপ্তার
যোগাযোগ। এদের সভ্যতা গ্রিক সভ্যতার চেয়েও পুরনো। তাছাড়া মিলেটাস ছিল একটি
ধনী বাণিজ্যিক শহর। বিভিন্ন জাতের যোগাযোগের মাধ্যমের কারণে এখানকার মানুষের
মধ্যে কুসংস্কার অন্ধবিশ্বাস তেমন গভীরভাবে প্রথিত ছিল না।
আয়নীয়বাসীর ধর্ম ছিল অলিম্পিক প্রকৃতির তবে তারাই ধর্মকে খুব গুরুত্বের সাথে
গ্রহণ করেছিল বলে মনে হয় না। আয়নীয়বাসীর ধর্মের খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চ শতকে
দাড়ি ও শেয়ার কর্তৃত্বে চলে যাওয়ার আগে পর্যন্ত বিশেষ সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। হেলেনিক বিশ্বের বা গ্রীষ্মের অন্যান্য স্থানে
যেমন ডায়োনিসাস অরসার্চিয়াসে ধর্মীয় আন্দোলনগুলো যেমন প্রভাবিত
করেছিল,
আয়নিকদেরকে এরা প্রভাবিত করতে পারেনি। দর্শনের পরবর্তী ধারাতে দক্ষিণ ইতালির
গ্রিক শহর গুলোর সাথে সম্পর্কিত। এ ধারাটি অধিক তো ধর্মীয়ভাবে পণ্য বিশেষ
অর্ধেক প্রভাব দ্বারা প্রভাবিত ছিল। কোন কোন দিক থেকে ওর পিক প্রভাবে প্রভাবিত
দর্শনের ধারা গুলো বেশি আকর্ষণীয় কৃতিত্ব দেখতে প্রশংসনীয় হলো মালয়েশিয়া
দার্শনিক চিন্তাধারা যতখানি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গের পরিচয় পাওয়া যায় তা
পরবর্তী গ্রীক দর্শন চিন্তায় পাওয়া যায় না।
আইয়নীয় দার্শনিকগণ যে দুটি প্রশ্ন করেন মানে এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের মূল সত্য
বা স্বরূপ কি ও শিমুল আদি সত্য থেকে কিভাবে দৃশ্যমান জগতের সৃষ্টি হলো এ দুটি
প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য পরবর্তী পাশ্চাত্য দার্শনিকের অক্লান্ত পরিশ্রম করে
গেছেন। থেলিসের মাইলেসীয় দর্শনের একটি রূপরেখা এই দুটো প্রশ্নের পরবর্তী
পাশ্চাত্য দর্শনে বিজ্ঞানের অগ্রগতি সাধন করেছেন।
আইয়নীয় দার্শনিকদের মধ্যে তৎকালীন ধর্মের প্রভাব
আয়নীয় দার্শনিক সম্প্রদায় হল গ্রীক দর্শনের প্রথম যুগের দার্শনিক। গ্রীক
দর্শনের প্রথম যুগের ধর্মের একটি বড় প্রভাব দেখা যায় যদিও পরবর্তী গৃহীত
দর্শনের যুগে ধর্মের একটি বড় প্রভাব দেখা যায় যদিও পরবর্তী গ্রীক দর্শনের
যুগেও ধর্মের প্রভাব ছিল। গ্রিক ধর্ম মতের প্রধান দুটো ধারা ছিল। এখনো হোমার ও
হেসিওয়েড পৌরনিক দেব দেবী ভিত্তিক ধর্মীয় মত আরেকটি হল এলিউসীনীয় ও অর্ফিক
মতের মত বিভিন্ন ধর্মমত।
আয়োনিওরা কোন রকম ধর্ম মতে প্রভাব ছিল না তবে হোম আরো হেসে ওয়েট এর পূরণ
কেন্দ্রিক ধর্ম মতে প্রভাব ছিল। আয়নীয় দর্শনের বস্তুবাদী ছিলেন তাদের দর্শন
পূরণকে ত্যাগ করে গড়ে ওঠে কিন্তু তারপরও তাদের দর্শন তৎকালীন ধর্মমতের প্রভাব
বিহীন হয়ে থাকতে পারেনি। তাই দেখা যায় তারা তাদের ব্যাখ্যায় দেব তাদের
বিভিন্ন রূপকের ব্যবহার নিয়ে আসেন।
এছাড়া সে সময় গ্রীকরা ছিলেন প্রকৃতবাদী। তারা প্রকৃতিকে সজীব বলে মনে করত
প্রাকৃতিক ঘটনা বলে কি মানুষের অনুভূতি ইচ্ছা উদ্দেশ্যের আলোকে ব্যাখ্যা ও
বিচার করতো। তারা প্রকৃতি থেকে নিজেদের সম্পূর্ণ আলাদা বলে ভাবতো না বরং
প্রকৃতির সাথে একত্ববোধ করত আর প্রকৃতির সাথে এ ধরনের একত্ববাদ করত বলে তারা
ধর্মীয় অভিজ্ঞতার জন্য নিজেদের অন্তরে দিক দিয়ে তাকিয়ে প্রকৃতির দিকে
তাকাতো।
টেলোপোনেশীয় যুদ্ধের পর অর্থাৎ খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতক থেকে গ্রীকদের মধ্যে
পারলৌকিক মরোমি ও বৈরাগের মনোভাব শক্তিশালী হতে থাকে। সে গৃঢ় ধর্মমত গুলো
প্রসারের কারণে। কিন্তু আয়নীয় দার্শনিকদের সময় গিরিকরা তখনও যথেষ্ট ইহলোকিক
প্রকৃতিবাদী ছিল। বৃত্তের এই প্রকৃতিবাদ প্রভাবিত করেছিল আয়নীয়
দার্শনিকদেরকে।
তারা প্রাণ বাঁচে তোমাকে প্রকৃতির সাথে একত্ব চিন্তা করে যার প্রভাব পড়েছিল
তাদের দর্শনে। আয়নীয় দার্শনিকরা তার ভেবেছেন সব বস্তুতে চেতনা আছে তারা এভাবে
প্রানের সাথে আগে সত্তা যেমন জলবায়ু সীমাহীন এর সম্পর্ক স্থাপন করাতে চেয়েছেন
বা পেরেছেন, কিভাবে এই আদিকাল থেকে প্রানের শ্রেষ্ঠ হল জল ও প্রাণীর মধ্যকার
মাইলেসীয় দর্শনের একটি রূপরেখা সম্পর্ক কি তা নিয়ে ভাবতে পেরেছেন।
লেখকের মন্তব্য
মাইলেসীয় দর্শনের একটি রূপরেখা এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। মাইলেসীয়
দার্শনিক সম্প্রদায়ের চিন্তাধারায় যতখানি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয়
পাওয়া যায় মাইলেসীয় পরবর্তী দার্শনিক চিন্তাধারা ততখানি বৈজ্ঞানিক
দৃষ্টিভঙ্গের পরিচয় পাওয়া যায় না।
আর হ্যাঁ আজকে পোস্টটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার পরিচিত
মানুষদের সাথে একটু শেয়ার করে দিয়ে তাদের উপকৃত করুন। বিভিন্ন রকম তথ্যমূলক
আর্টিকেল পেতে আমাদের permanentit ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন।
পার্মানেন্ট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url